তুমি কোন্ পথে এলে হে মায়াবী

তুমি কোন্ পথে এলে হে মায়াবী

তুমি কোন্ পথে এলে হে মায়াবী কবি
বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি।
এলো রাজ-সভা ছাড়ি’ ছুটি,
গুণিজন তোমার সে সুরে পাশরি’॥
তোমার চলার শ্যাম-বনপথ
কদম-কেশর-কীর্ণ,
তুমি কেয়ার বনের খেয়াঘাটে হলে
গোপনে কি অবতীর্ণ?
তুমি অপরাজিতার সুনীল মাধুরী
দু’চোখে আনিলে করিয়া কি চুরি?
তোমায় নাগ-কেশরের ফণী-ঘেরা মউ
পান করাল কে কিশোরী?
জনপুরী যবে কল-কোলাহলে
মগ্নোৎসব রাজ সভাতলে,

তুমি একাকী বসিয়া দূর নদী-তটে
ছায়া-বটে বাঁশি বাজালে,
তুমি বসি’ নিরজনে ভাঁট ফুল দিয়া
বালিকা বাণীরে সাজালে॥
যবে রুদ্র আসিল ডম্বরু-করে
ত্রিশূল বিঁধিয়া নীল অম্বরে,
তুমি ফেলিয়া বাঁশরি আপনা পাশরি,
এলে সে-প্রলয় নাটে গো,
তুমি প্রাণের রক্তে রাঙালে তোমার
জীবন-গোধূলি পাটে গো॥
হে চির-কিশোর, হে চির-তরুণ,
চির-শিশু চির-কোমল করুণ।
দাও অমিয়া আরো অমিয়া,
দাও উদয়-ঊষারে লজ্জা গো তুমি
গোধূলির রঙে রঙিয়া।
প্রখর রবি-প্রদীপ্ত গগনে,
তুমি রাঙা মেঘ খেল আন্মনে,
উৎসব-শেষে দেউলাঙ্গনে
নিরালা বাজাও বাঁশরি,
আমি স্বপন-জড়িত ঘুমে সেই সুর
শুনিব সকল পাশরি’॥