অমর কানন মোদের

অমর কানন মোদের অমর-কানন।
বন কে বলে রে ভাই, আমাদের তপোবন
আমাদের তপোবন॥
এর দক্ষিণে ‘শালী’ নদী কুলুকুলু বয়,
তার কূলে কূলে শাল-বীথি ফুলে ফুল-ময়,
হেথা ভেসে আসে জলে-ভেজা দখিনা মলয়,
হেথা মহুয়ার মউ খেয়ে মন উচাটন॥
দূর প্রান্তর-ঘেরা আমাদের বাস,
দুধ-হাসি হাসে হেথা কচি দুব-ঘাস,
উপরে মায়ের মতো চাহিয়া আকাশ,
বেণু-বাজা মাঠে হেথা চরে ধেনুগণ॥
মোরা নিজ হাতে মাটি কাটি নিজে ধরি হাল,
সদা খুশি-ভরা বুক হেথা হাসি-ভরা গাল,
মোরা বাতাস করি ভেঙে হরিতকী-ডাল,
হেথা শাখায় শাখায় পাখি, গানের মাতন॥
প্রহরী মোদের ভাই ‘য়রবী’ পাহাড়,
‘শুশুনিয়া’ আগুলিয়া পশ্চিম দ্বার,
ওরে উত্তরে উত্তরী কানন বিথার,
দূরে ক্ষণে ক্ষণে হাতছানি দেয় তালি-বন॥
হেথা ক্ষেত-ভরা ধান নিয়ে আসে অঘ্রাণ,
হেথা প্রাণে ফোটে ফুর, হেথা ফুলে ফোটে প্রাণ,
ওরে রাখাল সাজিয়া হেথা আসে ভগবান,
মোরা নারায়ণ-সাথে খেলা খেলি অনুখন॥
মোরা বটের ছায়ায় বসি করি গীতা পাঠ,
আমাদের পাঠশালা চাষী-ভরা মাঠ,
গাঁয়ে গাঁয়ে আমাদের মায়েদের হাট,
ঘরে ঘরে ভাই বোন বন্ধু স্বজন॥