নিরুদ্দেশের পথে যেদিন প্রথম আমার যাত্রা হ’ল শুরু,
নিবিড় সে কোন্ বেদনাতে ভয়-আতুর এ বুক কাঁপ্লো দুরুদুরু॥
মিট্লো না ভাই চেনার দেনা, অমনি মুহুর্মহু
ঘর-ছাড়া ডাক কর্লে শুরু অথির বিদায় কুহু
‘উহু উহু উহু!’
হাতছানি দেয় রাতের শাঙন,
অমনি বাঁধে ধর্লো ভাঙন,
ফেলিয়ে বিয়ের হাতের কাঙন –
আমি খুঁজি কোন্ আঙনে কাঁকন বাজে গো!
বেরিয়ে দেখি, ছুটছে কেঁদে বাদ্লী হাওয়া হু হু,
মাথার ওপর দৌড়ে টাঙন, ঝড়ের মাতন, দেয়ার গুরু গুরু॥
পথ হারিয়ে কেঁদে ফিরি, ‘আর বাঁচিনে!
কোথায় প্রিয় কোথায় নিরুদ্দেশ?’
কেউ আসে না, মুখে শুধু ঝাপ্টা মারে
নিশীথ-মেঘের আকুল চাঁচর কেশ!
‘তালবনে’তে ঝঞ্ঝা তাথৈ হাততালি দেয়, ব্রজে বাজে তূরী,
মেখ্লা ছিঁড়ি পাগলী মেয়ে বিজ্লী-বালা নাচায়
হীরের চুড়ি, ঘুরি’ ঘুরি’ ঘুরি’
(ও সে) সকল আকাশ জুড়ি’।
থাম্লো বাদল-রাতে কাঁদা,
ভোরের তারা কনক গাঁদা,
ফুঠলো, ও মোর টুট্লো ধাঁধা –
হঠাৎ ও কার নূপুর শুনি গো!
থাম্লো নূপুর, ভোরের তারাও বিদায় নিল ঝুরি’।
এখন চলি সাঁঝের বধূ সন্ধ্যাতারার চলার পথে গো!
আজ অস্তপারের শীতের বায়ু কানের কাছে বইছে ঝুরু ঝুরু॥