বঁধু আমার ভুবন ঘিরিল যখন ঘন বাদল ঝড়ে
কাঁদিয়া উঠিল মন প্রাণ অভিসারে আসিবার তরে।
(মোর মনে হল কেহ নাই,
এই কৃষ্ণ আঁধার নিশীথে রাধার কৃষ্ণ ছাড়া কেহ নাই।)
বঁধু, দিনের আলোকে পাই নাই খুঁজে, কাঁদিয়া ফিরেছি একা,
সব পথ যবে হারালো আঁধারে, তখন পাইনু দেখা।
হে পরম প্রিয়তম! বল মোরে বল
তব অভিসারে এসে সংসার-পথ চিরতরে শেষ হ’ল।
(যেন আর ফিরে নাহি যাই,
তুমি ছাড়া তব রাধা নিরাধার হয়ে যায় – যেন আর ফিরে নাহি যাই!)
হে কিশোর বলেছিলে,
তুমি নিজেরে নিঙাড়ি’ আমারে মধুর রসময়ী রূপ দিলে!
বঁধু তাই জড়াইয়া ধরি
তুমি না ধরিলে সব সর মধু ধূলায় যায় যে ঝরি!
(বঁধু আনন্দ আর রয়না তখন নিরানন্দ হয় ত্রিভুবন,)
সব সাধ অবসাদ বিম্বাদ হয়,
(মূল) রস নাহি দিলে দেহ-তরু প্রেম-ফুল কি বাঁচিয়া রয়?
প্রিয়তম হে! আর ভ্রমপথে ভ্রমিতে দিও না এই অভিসার শেষে
মোরে বক্ষে লুকায়ে রেখো হে যদি খোঁজে ননদিনী এসে,
ব’লো অভাগিনী রাধা যমুনার জলে ডুবিয়া গিয়াছে ভেসে।
(ব’লো রাই আর নাই দেশে নিরুদ্দেশের বিরহিনী গেছে হারায়ে নিরুদ্দেশে)